সম্রাটের স্ত্রী শারমিন: জুয়া ছিল নেশা, ক্যাসিনোর টাকা দিয়ে ‘দল চালাতেন’
Published on Sunday, October 6, 2019 at 9:18 pm
এমসি ডেস্কঃ নানা নাটকীয়তার পর জুয়া-চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ক্যাসিনো চালিয়ে যে অর্থ আসতো তা দিয়ে দল চালাতেন বলে জানিয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন। আজ বিকেলে র্যাবের অভিযানের সময় মহাখালীর নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সাথে শারমিনের কথা বলার সময় এমন নানান তথ্য উঠে আসে।
শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘ওর (সম্রাট) সাথে আমার দুই বছর ধরে সম্পর্ক নাই। ও যে ক্যাসিনোর গডফাদার, এটাও আমি জানি না। সবাই জানে ও ভালো একটা নেতা, সেটা আমিও জানি। এটা ঢাকা দক্ষিণের সবাই জানে। আমার সাথে দুই বছরের যেহেতু দূরত্ব, সে কারণে আমি জানি না ও এতবড় ক্যাসিনো চালায়।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শারমীন বলেন, ‘সম্রাটের জনপ্রিয়তাই প্রমাণ করে, যে সম্রাট দলের জন্য খরচ করেন। সব সময় দলীয় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছায়ার মতো থাকেন। সম্রাট সম্রাটের মতোই চলাচল করে।‘
আগে থেকে সম্রাটের জুয়ার নেশা ছিলো বলে জানিয়ে তার স্ত্রী বলেন, ‘ওর সম্পদ বলতে কিছু নাই। ও যা ইনকাম করে ক্যাসিনো চালিয়ে, তা দলের জন্য খরচ করে, দল পালে। আর যা বোধহয় রাখে, সিঙ্গাপুর কিংবা...এখানে জুয়া খেলে। ও সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলতেই যেত। জুয়া খেলা তার নেশা, কিন্তু সম্পত্তি করা তার নেশা না।’
ক্যাসিনোজগতে কিভাবে সম্রাট পা রাখেন - এমন প্রশ্নের জবাবে শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘ক্যাসিনোতে ও (সম্রাট) ধীরে ধীরে কীভাবে আসছে, সেটা আমি জানি না। কিন্তু ওর নেশা আছে জুয়া খেলার।’
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এই অভিযানটি আরও আগে চালালে ভালো হতো।’
ক্যাসিনো চালানোর ব্যাপারে সম্রাটকে কখনো নিষেধ করতেন কি না - এমন প্রশ্নের উত্তরে তার স্ত্রী বলেন, ‘ওর সাথে আমার একটু মিলত কম। মানে ও ছেলে-পেলে নিয়ে থাকতে বেশি পছন্দ করত। ও কিন্তু শুরু থেকেই সম্রাট। নাম যেমন... ও কিন্তু আর যারা আছে, ওদের মতো না। আগে থেকেই ওর চলাফেরা খুব ভালো।’
সিঙ্গাপুরে একাধিক নারীর সঙ্গে ছবির বিষয়ে বলেন, ‘একাধিক নয়, একজন নারীর সঙ্গে ওখানে গেলে সময় কাটাত। আমাকে সিঙ্গাপুরে নিত না।’
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় আজ ভোর ৫টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১ এর একটি বিশেষ দল। একই সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এনামুল হক আরমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
সম্রাটের সঙ্গে সহযোগী আরমানকেও ঢাকায় আনা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর দুপুর সেয়া ১টার দিকে সম্রাটের কাকরাইল কার্যালয় যায় র্যাবের একটি দল। এরপর বেলা ২টার দিকে ১৩৮ এবং ১৩৮/১, ১৩৯ শান্তিনগরের শেলটেক রহমান ভিলায় সম্রাটের ভাই বাদলের বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব।
একইসাথে সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসা মহাখালী ডিওএইচের ২৯ নম্বর রোডের ৩৯২ নম্বর বাড়িতে অভিযান শুরু করে র্যাব। মহাখালীর বাসায় উল্লেখযোগ্য কিছু না পেয়ে খালি হাতে ফিরে আসে র্যাব।
Leave a Reply