নাবালক ছেলেকে অপহরণ করে পিতা কর্তৃক তার নাবালিকা কন্যাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনা
Published on Saturday, June 6, 2020 at 9:26 pm
মোঃ জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর থেকে : দিনাজপুরে নাবালক ছেলেকে অপহরণ করে পিতা তার নাবালিকা কন্যাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে ছেলের পিতা দ্বীননাথ রায় পুত্র অপহরণ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ৮ মার্চ সন্ধ্যা প্রায় ৭টায় চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের লক্ষীনাথ রায়ের সাথে নয়ন চন্দ্র রায় ধর্মীয় গানের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। ৪নং শেখপুরা ইউনিয়ন সংলগ্ন জয়দেবপুর মাদ্রাসার সামনে পাকা রাস্তায় পৌঁছা মাত্রই অজ্ঞাতনামা ৩টি মটরসাইকেলে ৬/৭ জন পথ গতিরোধ করে। নয়ন চন্দ্র রায়কে চর থাপ্পড় কিল-ঘুষি মেরে তাদের মটর সাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে জোরপূর্বক অপহরণ করে দিনো চন্দ্র রায়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। তৎপর দিনো চন্দ্র রায়ের মেয়ে দিপালী রানী রায় (১৪) এর সহিত নয়ন চন্দ্র রায় (১৬) কে জোরপূর্বক বিবাহ দেয়ার জন্য ফুসলাতে থাকে। কিন্তু নয়ন চন্দ্র রায় বিয়ে করবে না মর্মে প্রকাশ করলে তারা খুন জখমের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এই ঘটনা লক্ষীনা রায় মুঠোফোনে দ্বীননাথ রায়কে জানালে পিতা তার পুত্রকে রক্ষা করতে আত্মীয় স্বজনের সহিত যোগাযোগ করতে থাকে। পরবর্তীতে দ্বীননাথ তার বড় পুত্রকে সুজন রায়কে লক্ষীনাথ রায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সুজন ও লক্ষীনাথ দুজনে দিনো চন্দ্র রায়ের বাড়িতে গিয়ে দেখে নয়ন চন্দ্র রায়কে তারা ঘরের মধ্যে আটক করে রেখেছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য আলাপ-আলোচনা করতে বললে বিনোদ চন্দ্র রায়সহ অন্যান্যরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে সুজন রায়কে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে দ্বীননাথ রায় স্থানীয় ৪নং শেখপুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে অবহিত করলে তিনি তার পরিষদে সমাধান করার জন্য ১০ মে রোববার বিকাল ৪টায় দিনক্ষন ঠিক করে। উক্ত তারিখে দিনো চন্দ্র রায় ছেলে-মেয়েকে ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত না করায় সমস্যার সমাধান হয়নি। ছেলে মেয়েকে হাজির রেখে পরবর্তীতে পুনরায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আপোষ করে দিবেন মর্মে আশ্বস্ত করলে আপোষ-মিমাংসা হয়নি। এ বিষয়ে দ্বীননাথ রায় তার পুত্র অপহরণ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অফিসার ইনচার্জ কোতয়ালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। যার মামলা নং-৮, তাং-৫/৬/২০২০ ইং। মেয়ের পিতা দিনো চন্দ্র রায়কে এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাবালক ছেলেকে দিয়ে আমার নাবালিকা কন্যার বিয়ে দিয়েছি। তাতে কারও আসে যায় না। আমি এ ব্যাপারে কোন পরোয়া করি না। এলাকার সচেতন মহল জানান, বাল্য বিবাহ সামাজিক ব্যাধি হলেও মেয়ের পিতা দিনো চন্দ্র রায় সন্ত্রাসী কায়দায় ১৬ বছরের নাবালক নয়ন চন্দ্র রায়কে অপহরণ করে তার ১৪ বছরের কন্যা দিপালী রানী রায়ের সাথে বিয়ে দেয়ার চেষ্টার ঘটনাটি নেক্কারজনক। এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন সংশিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্হক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন এলাকাবাসী।
Leave a Reply