ইন্টারনেট বন্ধ করে দিলো ইরান!
Published on Monday, November 18, 2019 at 7:13 pm
এমসি ডেস্কঃ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে ইরানে শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিলে গতকাল রোববার প্রায় সব ধরনের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
১৫ নভেম্বর থেকে নতুন আইন অনুযায়ী প্রত্যেক মোটরযান মালিক মাসে ১৫ হাজার রিয়াল হারে ৬০ লিটার পেট্রোল কিনতে পারবেন। নির্ধারিত পরিমাণের পর প্রতি লিটার পেট্রোল কিনতে গুণতে হবে ৩০ হাজার রিয়াল। এর আগে, প্রতি লিটার ১০ হাজার রিয়াল দামে ২৫০ লিটার পর্যন্ত পেট্রোল কিনতে পারতেন ইরানি নাগরিকরা। সরকারের ওই ঘোষণার পরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
ইরানের আধা সরকারি ফার্স নিউজের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন দিনের সহিংস বিক্ষোভে ইতোমধ্যেই ১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। গ্রেপ্তারের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।
এ বিক্ষোভের মধ্যেই গতকাল জ্বালানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সরকারের প্রধান তিন বিভাগ প্রেসিডেন্সি, বিচার বিভাগ ও পার্লামেন্টের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিক্ষোভে হতাহতের কথা স্বীকার করলেও দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। বিক্ষোভের সাথে অভ্যন্তরীণ বিরোধী শক্তি ছাড়াও ‘বিদেশি শত্রুদের’হাত আছে বলে দাবি করেন খামেনি।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, প্রশাসনের সকল সিদ্ধান্ত সবার পছন্দ না হতেই পারে। পেট্রোলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকরের সিদ্ধান্তে বিক্ষোভ হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু না। প্রতিবাদের অধিকার জনগণের আছে। তবে প্রতিবাদের নামে নাশকতা সহ্য করা হবে না ।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদোলরেজা রাহমানি ফাজলি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি করলে স্থিতিশীলতা ফেরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
শুক্রবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভবনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। একটি ব্যাংকে আগুন লাগিয়ে ফুটেজও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। ভিডিওগুলোতে রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে গাড়ির রেখে রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলনকারীদের অগ্নিসংযোগ করতেও দেখা যায়। বিক্ষোভে এমন সহিংসতার পরই বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।
Leave a Reply