অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত নবাবগঞ্জের আশুড়ার বিল
Published on Wednesday, October 16, 2019 at 7:36 pm
এমসি ডেস্কঃ শালবনের ভেতরে মেঠোপথ ধরে হাঁটতেই দূর থেকে কানে এলো অচেনা পাখির কলরব। কিচিরমিচির শব্দে চারদিকে যেন সুরের মূর্ছনা খেলা করছে। একটু সামনে যেতেই মেঠোপথের শেষ প্রান্তে বিস্তীর্ণ জলরাশির সঙ্গে যোগ হয়েছে বিচিত্র অতিথি পাখির জলকেলি। বিলের জলে হাজারও শাপলা ও পদ্মফুলের সমারোহ। জলে ডানা ঝাপটাচ্ছে বিচিত্র সব পাখি, এ যেন এক অপরূপ সাজে সেজেছে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুড়ার বিল।
শীত আসতে এখনও বেশ বাকি তবে এর মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। দেখা গেল বালিহাঁস, রাতচোরা, কাদাখোঁচা, সাদা বক ও পানকৌড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। চলতি বছরের ফের্রুয়ারি মাসে এ বিলে তৈরিকৃত ৯০০ মিটার দীর্ঘ শেখ ফজিলাতুন্নেছা কাঠের সেতু ও আশুড়ার বিলে অতিথি পাখির আগাগোনা দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বেজায় খুশি। দিনের পুরো সময় জুড়ে এসব বিচিত্র অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত থাকে বিলের পরিবেশ। এসব অতিথি পাখির কলরবে মুগ্ধ দূর-দূরান্ত থেকে বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা প্রকৃতিপ্রেমীরাও।
উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বিলের কাদা-জলে লাগানো শাপলা ও পদ্ম বীজ থেকে জন্মানো গাছে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। বিলের পূর্বপাশে পানি ধরে রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছে ক্রস ড্যাম। কাঠের সেতুতে দাঁড়িয়ে পর্যটকরা নয়ন ভরে দেখছেন পাখির জলকেলি, শাপলা ও পদ্মের অপরূপ সৌন্দর্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দর্শনার্থীরা বিভিন্ন পরিবহন নিয়ে শালবনের ভেতর দিয়ে বিলের পথে ছুটছেন। শেষ বিকালে বিল ও শালবনের মুক্ত বাতাস, সবুজের সমারোহ, পাখিদের কিচিরমিচির, বিলের মুক্ত আকাশে ঝাঁকেঝাঁকে বিচিত্র পাখির অবাধ বিচরণ এসব নান্দনিক দৃশ্য পর্যটকদের মনে জাগিয়ে তুলেছে এক অন্যরকম অনুভূতি। ৫১৭.৬১ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ও ২০১০ সালে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত জাতীয় উদ্যানটির মাঝের অংশে আশুড়ার বিলের অবস্থান। এ বিলের আয়তন ৩১৯ হেক্টর। নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান রক্ষা ও উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মোঃ মাহাবুর আলম জানান, ‘আশুড়ার বিলে ক্রসড্যাম তৈরি হওয়ায় বিলে পানি বেড়েছে। ফলে শাপলা ও পদ্ম ফুলের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। বিলের ইতোমধ্যে কয়েক হাজার অতিথি পাখি এসেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, আশুড়ার বিলে কেউ যাতে অবৈধভাবে মৎস্য ও পাখি শিকার করতে না পারে সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। আগে আশুড়ার বিলে অতিথি পাখি তেমনটা আসত না। তবে এবার শীত শুরু হওয়ার আগেই বিলে অতিথি আসা শুরু করেছে।
Leave a Reply